পরমহংস যোগানন্দ-র আলোচনা ও লেখা থেকে…
ঈশ্বর মানবহৃদয়ে লুকোচুরি খেলে চলেছেন, যাতে শেষমেশ তুমি বুঝতে পারো যে, তোমার ভিন্ন ভিন্ন মানবিক প্রেমের মধ্য দিয়ে তুমি তাঁরই দিব্যপ্রেমের অনুসন্ধান করছ। তোমার মানবিক প্রেম থেকে ঈশ্বরকে বাদ দিলে, প্রেমও ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যাবে। তবে আপন অন্তরে ঈশ্বরের মূর্ত রূপকে প্রকাশিত করে নিজ দৈনন্দিন জীবনে তাঁর উপস্থিতিতে , সাধারণ মানবিক প্রেমকে দিব্যপ্রেমে পরিবর্তন করা যায়।
আবার সকল মানুষকে এবং অন্যান্য সব প্রাণীকেও ব্যক্তিগত ভাবে বা স্বতন্ত্র ভাবে জানতে হবে, ভালোবাসতে হবে – এর কোনো প্রয়োজন নেই। তোমায় যা করতে হবে , তা হল –জীবজগতের প্রাণীকুল, যারা তোমার সংস্পর্শে আসবে, তাদের সবার প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ সেবার হাত বাড়িয়ে দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকা। এই মনোবৃত্তি গঠনে প্রয়োজন নিরন্তর মানসিক প্রস্তুতির প্রচেষ্টা এবং নিঃস্বার্থপরতার অভ্যাস।
পারস্পরিক সম্পর্কের আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্য সম্বন্ধে যদি আমরা অবগত থাকি – অন্যদের প্রতি ভালোবাসার সীমাহীন বৃত্তে নিজ-প্রেমের সম্প্রসারণ শেখাতে —বন্ধুত্ব, দাম্পত্য স্নেহ, পিতামাতার ভালোবাসা, পারিপার্শ্বিক মানুষজন ও সজীব প্রাণীকুলের ভালোবাসার পথ দিয়ে আমরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের মহান ঐশী প্রেমের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারব।
ঐশ্বরিক প্রেমের সাথে একাত্ম না হলে পর, কোনো প্রেমই যথার্থ প্রেম হতে পারে না; কারণ প্রকৃত প্রেম একমাত্র ঈশ্বরের থেকে আসে । মানবিক প্রেমকে দিব্য প্রেমে পরিণত করতে অতি অবশ্যই গভীর ও নিঃস্বার্থ হতে হবে। হৃদয়ের ভালোবাসাকে পবিত্র করতে হবে যতক্ষণ না তা দিব্য প্রেমে পরিণত হয়।
একটি সংকল্প বাক্যের অভ্যাস: “অন্যদের মধ্যে শুভেচ্ছা ও প্রেমের আলো বিকিরণ করে, আমি নিজের প্রতি দিব্য প্রেমের পথ উন্মুক্ত করব। দিব্যপ্রেম চুম্বকের মতো সমস্ত শুভকে আমার প্রতি আকর্ষিত করে।”
দিব্য প্রেমের প্রকৃতি এবং আপনার জীবনে কিভাবে এটি অনুভব ও প্রকাশ করা যায়, সে সম্পর্কে পরমহংসজির গভীর অনুপ্রেরণামূলক নির্দেশনা জানতে নিচের লিঙ্কে যোগাযোগ করুন।