কেবল গুরু-শিষ্য সম্পর্কের মাধ্যমেই কোনও মানবাত্মা পুনরায় ঈশ্বরের কাছে ফিরে যেতে পারে, কারণ চূড়ান্ত মুক্তিলাভ তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে: ভক্তের প্রচেষ্টা, গুরুর সাহায্য ও ঈশ্বরের কৃপা…গুরুর সাহায্য অত্যন্ত আবশ্যক, যখন ভক্তের মধ্যে কোনো সংশয় আসে বা তার আধ্যাত্মিক সংকল্প দুর্বল হয়ে পড়ে তখন গুরুর কাছে গভীর ভাবে প্রার্থনা জানালে, ঈশ্বরের সেই বাহন শিষ্যকে আশীর্বাদ করেন ও পথ দেখান।
— শ্রীশ্রী পরমহংস যোগানন্দ
প্রিয়বরেষু,
গুরু পূর্ণিমা আমাদের মহিমান্বিত গুরুর প্রতি পরম শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ,আনুগত্য প্রকাশ করার এক আশীর্বাদপূত সুযোগ —ঈশ্বর নির্ধারিত পবিত্র যন্ত্রস্বরূপ গুরু শিষ্যকে আত্মার সম্পূর্ণ মুক্তিলাভে সাহায্য করেন। আমরা কতই না ভাগ্যবান আমাদের কাছে আমাদের পরম প্রিয় গুরুদেব পরমহংস যোগানন্দজি রয়েছেন এবং তাঁর মধ্যে ঈশ্বরের নির্বিশেষ এবং চির উৎসাহদায়ী প্রেম সঠিক রূপে মূর্ত হয়েছে।
মহাপুরুষেরা আমাদের আশ্বস্ত করে গেছেন জীবনের সব বাধার থেকে শক্তিশালী গুরুর অব্যর্থ আশীর্বাদ এবং সাহায্য যা তাদের ওপরই থাকে যারা তাঁর প্রজ্ঞাপূর্ণ নির্দেশ এবং চিরন্তন সখ্যতা গ্রহণ করতে প্রস্তুত। আমাদের এই পৃথিবীর যাত্রাপথের অধিকাংশই নানা বাধাবিপত্তি ও চিত্ত বিক্ষেপে ভরপুর, আমরা যদি বারবার গুরুদেবকে মনে করে মুক্ত মন ও হৃদয় দিয়ে তাঁর কাছে নম্রতা ও ভালোবাসার সঙ্গে আত্মসমর্পণ করতে পারি –আমরা নিশ্চিতভাবে দিব্য সাহায্য এবং অন্তর্দৃষ্টি লাভ করব যা আমাদের একান্ত প্রয়োজন। তাঁর চিরন্তন নিরাপত্তার আশ্রয় নিলে এমন কোনো সমস্যা থাকবে না যার আমরা মুখোমুখি হতে বা অতিক্রম করতে পারব না।
গুরুদেবের প্রিয় ভক্তেরা আপনাদের জন্য আমার প্রার্থনা এই যে, আপনারা নিজ অন্তরের স্থির সংকল্প আরেকবার দৃঢ় করে তাঁর দিব্য চেতনার সঙ্গে আরো গভীরভাবে নিজেকে মিলিয়ে দিন । তাঁর পবিত্র ক্রিয়াযোগ শিক্ষায় আপনি যত নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নিয়োজিত করবেন, জানবেন আপনার চেতনা পরিশুদ্ধ ও পরিবর্তিত হচ্ছে এবং তিনি আপনাকে আপনার নিজের কৈবল্য—অর্থাৎ পরমাত্মার সঙ্গে একীভূত হওয়ার দিকে আকর্ষণ করছেন। জয় গুরু!
ঈশ্বর ও গুরুদেবের ভালোবাসা ও অনন্ত আশীর্বাদের সঙ্গে ,
স্বামী চিদানন্দ গিরি