পরমহংস যোগানন্দ ভারতের গোরক্ষপুরে ১৮৯৩ এর ৫ জানুয়ারি এক ধার্মিক ও সচ্ছল বাঙালি পরিবারে মুকুন্দলাল ঘোষ নামে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই তাঁর সচেতনতার গভীরতা ও পারমার্থিক অভিজ্ঞতা অসাধারণ বলেই আশেপাশের সবার কাছেই প্রতীয়মান ছিল।
তাঁর পিতা-মাতা উভয়েই আধুনিক ভারতে ক্রিয়াযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠাকারি খ্যাতনামা গুরু লাহিড়ী মহাশয়ের শিষ্য ছিলেন। মায়ের কোলে থাকা শিশু যোগানন্দকে আশীর্বাদ করে লাহিড়ী মহাশয় ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন: “মা জননী, তোমার ছেলে একজন যোগী হবে, আর আধ্যাত্মিক ইঞ্জিনের মত এ বহু লোককে ভগবানের রাজ্যে টেনে নিয়ে যাবে।”
যুবক মুকুন্দ তাঁর আধ্যাত্মিকতার পথে পথনির্দেশনার জন্য একজন জ্ঞানোদীপ্ত গুরুর খোঁজে ভারতের বহু সাধু সন্তের কাছে আবেদন করেন। ১৯১০ এ, তাঁর ১৭ বছর বয়সে শ্রদ্ধেয় স্বামী শ্রীযুক্তেশ্বর গিরির (ডানদিকে) দেখা পেয়ে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর জীবনের আগামী দশ বছর যোগের এই বিশিষ্ট গুরু শ্রীযুক্তেশ্বরজির আশ্রমে গুরুর নিয়মনিষ্ঠ ও প্রেমপূর্ণ আধ্যাত্মিক শৃঙ্খলায় সুন্দর সময় কাটিয়েছেন।
তাঁদের প্র্রথম মিলনে, এমনকি পরবর্তীতেও শ্রীযুক্তেশ্বর তাঁর এই যুবক শিষ্যকে ক্রিয়াযোগের প্রাচীন বিজ্ঞান আমেরিকা ও সারা বিশ্বে প্রচার করার জন্যে সে মনোনীত বলেই অনেকবারই জানিয়েছেন।
মুকুন্দ, ১৯১৫-তে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হবার পরে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের প্রাচীন সম্মানিত সন্ন্যাসব্রতে দীক্ষা নিলে যোগানন্দ (যোগের মাধ্যমে ঐশ্বরিক একাত্মতায় মঙ্গল, আনন্দ নির্দেশক) নাম পান। ঈশ্বরপ্রেম ও সেবায় তাঁর জীবন উৎসর্গ করে পূর্ণতাপ্রাপ্তির তীব্র আকাঙ্খা এভাবেই পরিপূর্ণ হয়েছিল।