ধ্যান কী?
নিজের সত্তাকে পুনরায় অসীম পরমাত্মা বা ঈশ্বরের সাথে সংযুক্তিকরণের বিজ্ঞান হল ধ্যান। নিয়মিত ও গভীর ধ্যান অভ্যাসে আপনি জাগিয়ে তুলতে পারেন আপনার সত্তাকে — আপনার সত্তার অন্তর্নিগূঢ় অমর, আনন্দময় দিব্য চৈতন্য। যোগ ও ধ্যান আমাদের সত্তার অসীম শক্তি উদ্ঘাটনের কালোত্তীর্ণ পরীক্ষিত উপায়। এটা চিন্তা বা দার্শনিক মননের কোনো অস্পষ্ট মানসিক প্রক্রিয়া নয়। আমাদের আসল স্বরূপের জ্ঞান থেকে বিরত রাখা জীবনের নানা বিক্ষেপ থেকে মনোযোগ মুক্ত করে, অশান্ত ও অস্থির চিন্তা শান্ত করে — আমরা যে আসলে সেই অপরূপ দিব্য সত্তা সেটা জানার প্রত্যক্ষ উপায়। ধ্যানের নিয়মানুবর্তিতা পালনের মাধ্যমে আমরা অটল শান্তি ও আনন্দের কেন্দ্র আবিষ্কার করে নিজ অন্তরে মনোনিবেশ করা শিখতে পারি।
ধীরে ধীরে ধ্যানে উন্নতি করতে থাকলে আপনি অনুভব করতে পারবেন এক ক্রমবর্ধমান আত্মিক শান্তি ও আনন্দ। আপনার অন্তরাত্মা কোনো এক অতি মহিমান্বিত অবস্থায় ঈশ্বরের সাথে একত্ব উপলব্ধি করবে। এই ধ্যানের উদ্দেশ্য সমাধি — পরমানন্দিত, অতিচেতন, মঙ্গলময় ঐশ্বরিক অনুষঙ্গ।
পরমহংস যোগানন্দ ক্রিয়াযোগ বিজ্ঞানের একটা অংশ বিবেচনায় ধ্যানের এক শক্তিশালী প্রক্রিয়া শিখিয়েছেন। যোগদা সৎসঙ্গ পাঠমালাতে এই প্রক্রিয়াগুলো পাওয়া যায়। ধ্যানের এই মহত্তম প্রক্রিয়া শিখে অগ্রগামী হতে ইচ্ছুক হলে যে কেউই এই পাঠমালাকে অমূল্য সম্পদ ও সারাজীবনের অবলম্বন বলেই আবিষ্কার করে।
যোগদা সৎসঙ্গ পাঠমালার জন্যে এখনও নথিভুক্ত না করা থাকলেও আপনি এই পৃষ্ঠাতেই ধ্যান করার কিছু প্রাথমিক নিয়মাবলি পাবেন, আপনি এখনই ধ্যান করা শুরু করে উপলব্ধি করতে পারেন শান্তি ও ঐশ্বরিক চৈতন্য।
ধ্যানের উপকারিতা
ধ্যানের উপকারিতা বহুমুখী। নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে শরীর, মন ও অন্তরতম চেতনার সূক্ষ্ম পরিবর্তন ঘটতে থাকে। কিছু উপকারিতা সাথে সাথেই অনুভূত হয়; বাকি সব ধীরে ধীরে উপলব্ধ হতে থাকে যদিও স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হতে আরও সময় লাগতে পারে।
- অন্তরের শান্তি ধ্যানের প্রাথমিক সুফলের একটি। এর সাথে সাথে আরও নির্মলতা, ধীশক্তি ও নির্দেশনা অন্তঃস্থল থেকে আসে।
- দৈনন্দিন জীবনে উদ্ভূত সমস্যার মোকাবিলায় ধ্যান সুবিচার ও স্বতঃলব্ধ জ্ঞান উপস্থাপিত করে। ধ্যাতার মনঃসংযোগ ও দক্ষতা এবং কাজের প্রতি সচেতনতা উন্নত করে।
- ধ্যান পারিবারিক জীবনে উদার সম্প্রীতি ও আনন্দ নিয়ে এসে নিঃশর্ত ভালোবাসা দেওয়া ও নেওয়ার সামর্থ্যের উন্মেষ ঘটায়।
- ধ্যান শরীরে প্রাণশক্তির সামঞ্জস্য এনে, ক্ষতিকর নিষ্পেষণ সরিয়ে স্বাস্থ্য ও জীবনীশক্তি উন্নীত করে।
- সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হল, ঈশ্বরের সাথে ধ্যাতার চেতনার সমন্বয় সাধনে সাহায্য করে, ধ্যান, জীবনের সকল পরিস্থিতিতে অবিচল প্রসন্নতা ও নিরাপত্তা প্রদান করে।
এই পরিণাম ধ্যাতার জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য — আত্মোপলব্ধির মাধ্যমে চিরনূতন আনন্দ ও ঈশ্বরের সাথে একাত্মতা না হওয়া পর্যন্ত ইচ্ছাকে সংহত করে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাওয়ার আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আসে।
পরমহংস যোগানন্দের রচনা থেকে:
“ধ্যান ব্যতীত বাকি সবকিছু করতে তুমি সমর্থ হলেও, চিন্তা নিস্তরঙ্গ হয়ে অব্যক্ত শান্তিতে নিমজ্জিত হবার যে আনন্দ তার হদিস পাবে না।”
— শ্রীশ্রী পরমহংস যোগানন্দ
যোগদা সৎসঙ্গ পাঠমালা
ঈশ্বর-অনুভূতির বিজ্ঞানই ধ্যান। এটাই বিশ্বের বাস্তব সম্মত বিজ্ঞান। এর মূল্য বুঝতে পারলে ও হিতকরী প্রভাব অনুভব করলে প্রায় সবাই ধ্যান করতে পছন্দ করবে। ঈশ্বরসত্তার সচেতন অবগতি ও তাঁর সাথে নিজের সনাতন একত্ব উপলদ্ধি করাই ধ্যানের প্রকৃত উদ্দেশ্য। মানুষের সীমিত গুণের ব্যবহারে সর্বব্যাপী ও সর্বশক্তিমান স্রষ্টার উপলব্ধি থেকে আর কোন প্রাপ্তি আরও বেশি উদ্দেশ্যসাধক আর উপযোগী হতে পারে? ঈশ্বর-উপলব্ধি ধ্যাতাকে ঈশ্বরের শান্তি, আনন্দ, শক্তি ও জ্ঞান দান করে।
ধ্যান মনঃসংযোগের সর্বোচ্চ অবস্থার সদ্ব্যবহার করে। বিবিধ বিক্ষেপ থেকে মনকে মুক্ত করে নিজের আগ্রহমত কোনও চিন্তায় কেন্দ্রিত করাতেই মনঃসংযোগ নিহিত। অস্থিরতা থেকে মুক্ত হয়ে মনোযোগ ঈশ্বরে কেন্দ্রিত করার এক বিশেষ প্রকার মনঃসংযোগই হল ধ্যান। সেহেতু, বলা যায় ঈশ্বরকে জানার জন্য নিয়োজিত মনঃসংযোগই হল ধ্যান….
ঈশ্বর উপস্থিতির প্রথম প্রমাণ এক অবর্ণনীয় শান্তি। এটাই বিবর্ধিত হয় মানবিক কল্পনাতীত আনন্দে। আপনি একবার সত্য ও জীবনের উৎস স্পর্শ করলেই সমস্ত প্রকৃতি আপনার ডাকে সাড়া দেবে।
ঈশ্বর-অনুভূতির বিজ্ঞানই ধ্যান। এটাই বিশ্বের বাস্তব সম্মত বিজ্ঞান। এর মূল্য বুঝতে পারলে ও হিতকরী প্রভাব অনুভব করলে প্রায় সবাই ধ্যান করতে পছন্দ করবে। ঈশ্বরসত্তার সচেতন অবগতি ও তাঁর সাথে নিজের সনাতন একত্ব উপলদ্ধি করাই ধ্যানের প্রকৃত উদ্দেশ্য। মানুষের সীমিত গুণের ব্যবহারে সর্বব্যাপী ও সর্বশক্তিমান স্রষ্টার উপলব্ধি থেকে আর কোন প্রাপ্তি আরও বেশি উদ্দেশ্যসাধক আর উপযোগী হতে পারে? ঈশ্বর-উপলব্ধি ধ্যাতাকে ঈশ্বরের শান্তি, আনন্দ, শক্তি ও জ্ঞান দান করে।
ধ্যান মনঃসংযোগের সর্বোচ্চ অবস্থার সদ্ব্যবহার করে। বিবিধ বিক্ষেপ থেকে মনকে মুক্ত করে নিজের আগ্রহমত কোনও চিন্তায় কেন্দ্রিত করাতেই মনঃসংযোগ নিহিত। অস্থিরতা থেকে মুক্ত হয়ে মনোযোগ ঈশ্বরে কেন্দ্রিত করার এক বিশেষ প্রকার মনঃসংযোগই হল ধ্যান। সেহেতু, বলা যায় ঈশ্বরকে জানার জন্য নিয়োজিত মনঃসংযোগই হল ধ্যান…
ঈশ্বর উপস্থিতির প্রথম প্রমাণ এক অবর্ণনীয় শান্তি। এটাই বিবর্ধিত হয় মানবিক কল্পনাতীত আনন্দে। আপনি একবার সত্য ও জীবনের উৎস স্পর্শ করলেই সমস্ত প্রকৃতি আপনার ডাকে সাড়া দেবে।
“নিজের মধ্যে ঈশ্বরকে পেলেই তুমি তাঁকে সর্বত্র, সবার মধ্যে আর সব পরিস্থিতিতে পাবে।”
— শ্রীশ্রীপরমহংস যোগানন্দ,
আধ্যাত্মিক ধ্যান